র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু ও সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ কমিটির উদ্যোগে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুজ্জামান হীরা বলেন, পত্রিকায় উদ্ধৃত বয়ানটি দেশের প্রতিটি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কথা। সরকারের লুটপাট ও বাজার নৈরাজ্যের কষাঘাতে ওষ্ঠাগতপ্রাণ মানুষের আর্তচিৎকার ঐ বাক্যটি। তিনি বলেন, অস্ত্র হাতে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। মানচিত্র ও পতাকা পেলেও অর্থনৈতিক মুক্তি আসে নাই। সেই মুক্তি সংগ্রাম চলছে, চলবে! ‘পেটে ভাত নাই’ বলায় যারা গলা টিপে ধরেছে তাদের পতন আসন্ন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে বাজার নৈরাজ্য বন্ধ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, বাকস্বাধীনতা হরণ ও সংবাদ মাধ্যমের কণ্ঠরোধ বন্ধ, র্যাবসহ নিরাপত্ত বাহিনীর হেফাজতে সকল ‘মৃত্যু’ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানানো হয়।
সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুজ্জামান হীরা সভাপতিত্বে এবং সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাইফুল ইসলাম সমীরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুুল্লাহ ক্বাফী রতন, সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, সদস্য মঞ্জুর মঈন প্রমুখ।
সমাবেশে রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, অর্থ পাচার ও সর্বব্যাপী লুটপাটের ফলাফল হিসেবে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনসাধারণের নাগালের বাইরে। বড় প্রকল্পের বড় লুটের দায় জনতার কাঁধে চাপাতে গিয়ে ক্রমাগত জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ফল স্বরূপ সাধারণ মানুষ খাদ্য তালিকা, প্রাত্যহিক ব্যয় সংকোচন করেও বাঁচতে পারছে না। তিনি বলেন, যারা মানুষের জীবন বাঁচানোর দাবিতে কথা বলছে তাদের গ্রেফতার করে, ভয় দেখিয়ে দমন করা যাবে না। তিনি র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন।
সমাবেশে ক্বাফী রতন বলেন, স্বৈরাচারী সরকার মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং গণআন্দোলন দমনে ফ্যাসিবাদী নির্যাতনকে হাতিয়ার করেছে। ইতিহাসের শিক্ষা হলো, গুম-খুন, দমন-পীড়ন, নির্যাতন করে কোন স্বৈরশাসকের মসনদ চিরস্থায়ী হয়নি। বর্তমান শাসকরাও গণআন্দোলনের সামনে টিকবে না।
সমাবেশ থেকে সিপিবি ঢাকা দক্ষিণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার ‘দাম কমাও, জান বাঁচাও’, বাকস্বাধীনতা হরণ ও সংবাদ মাধ্যমের কন্ঠরোধ বন্ধ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে সকল ‘মৃত্যুর’ বিচার বিভাগীয় তদন্ত, নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা শহরের পাড়া মহল্লায় বিক্ষোভ সমাবেশ পথসভা, পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি দেশের আপামর জনসাধারণকে গণআন্দোলনে সামিল হয়ে চলমান দুঃশাসনের অবসান এবং ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে গণঅভ্যুত্থান রচনার আহ্বান জানান।