চট্টগ্রামের হোটেল টাওয়ার ইনে সংবাদ সম্মেলন ডেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। গতকাল আফগানদের বিরুদ্ধে ওয়ানডেতে হারের পর সাংবাদিকদের কে মধ্যরাতে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠান তামিম ইকবাল। চট্টগ্রামের হোটেল টাওয়ার ইনের বাইরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জটলা বাড়ছিল ক্রিকেটপ্রেমীদের। সংবাদ সম্মেলনে তামিমের মুখ দিয়ে যেন কথা বেরোচ্ছিল না। কান্নার জন্য ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না তামিম। ধরে আসা গলায় তামিম জানান, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এই মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি। সিদ্ধান্তটি হুট করে নেওয়া নয়। অনেকদিন ধরেই আমি এটা নিয়ে ভাবছি। পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছি এটা নিয়ে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ১৬ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের জন্য তামিম ধন্যবাদ দিয়েছেন সতীর্থ, কোচ, বিসিবি, পরিবার ও সমর্থকদের, ‘ক্যারিয়ারের এই দীর্ঘ পথচলায় আমার সব সতীর্থ, সব কোচ, বিসিবির কর্মকর্তাগণ, আমার পরিবার ও যারা আমার পাশে ছিলেন, নানাভাবে সহায়তা করেছেন, ভরসা রেখেছেন এবং আমার ভক্ত-সমর্থক, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনুসারী, সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের সবার অবদান ও ভালোবাসায় আমি চেষ্টা করেছি সব সময় দেশের জন্য নিজের সবটুকু উজাড় করে দিতে।’
মাসখানেক ধরেই কোমরের চোটে ভুগছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল। যে কারণে সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটিও খেলতে পারেননি টাইগার এই ওপেনার। এরপর শঙ্কা জেগেছিল ওয়ানডে সিরিজে খেলা নিয়েও। নিয়মিত অনুশীলন চালিয়েও শতভাগ ফিট হয়ে উঠতে পারেননি তামিম। তবে আফগানদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে তামিম জানিয়ে দেন শতভাগ ফিট না হলেও প্রথম ওয়ানডে খেলবেন তিনি। শেষমেশ খেলেছেনও।
তামিমের এমন সিদ্ধান্তে কিছুটা রাগান্বিত হন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দেশের একটি দৈনিককে তিনি বলছিলেন, ‘এটি তো আর পাড়া-মহল্লার কোনো ম্যাচ নয়, আন্তর্জাতিক একটা ম্যাচ। এমন সিরিজের আগের দিন অধিনায়ক বলছে সে ফিট না। কিন্তু খেলবে। খেলে নিজের ফিটনেস বোঝার চেষ্টা করবে। এটা তো পেশাদার কোনো আচরণ হতে পারে না।
বিসিবি সভাপতির এমন মন্তব্যের পরপরই মূলত অবসরের ঘোষণাটা দিলেন তামিম। এর আগে ২০২২ সালের ১৬ জুলাই হঠাৎই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। এবারো অনেকটা হুট করেই বিদায়ের কথা জানালেন।