কমরেড লেনিন যখন পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করলেন তখন মস্কোর কমিউনিস্টরা লেনিনের জন্মজয়ন্তী আয়োজন করেছিল। সেই অনুষ্ঠানে বক্তারা যখন লেনিনের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখতে শুরু করলেন লেনিন তখন তাদের থামিয়ে দিয়ে কমরেডদের আহ্বান জানান অসাধিত কর্তব্যগুলোর দিকে পার্টির সমস্ত মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে। আজকের দিনে আমাদেরকে মানবমুক্তির লক্ষ্যে অসাধিত সংগ্রামকে সংগঠিত করার জন্য শুধুমাত্র কমরেড লেনিনের জন্মদিনে নয় বরং প্রতিটা দিনেই সর্বহারার মহানায়কের শরণাপন্ন হতে হয়। বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নির্মাতা ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানভের জন্ম হয় ১৮৭০ সালের ২২ শে এপ্রিল (পুরাতন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ই এপ্রিল) মহানদী ভলগার তীরে সিমবির্স্ক শহরে। সমগ্র বিশ্বের মেহনতি শ্রেণীসচেতন জনগোষ্ঠী এই দিনটিতে তাদের গর্বের ধন লেনিনকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করে।
বিশিষ্ট মার্ক্সবাদী অধ্যাপক জ্যোতি ভট্টাচাৰ্য বলেছিলেন, ভ্লাদিমির ইলিচ উলিয়ানোভ ইতিহাস রচনা করেছিলেন। আর তাঁকে রচনা করেছিল তাঁর মা, দিদি, ছোট ভাই, ছোট বোন, ভগ্নিপতি, তাঁর স্ত্রী, তাঁর সহকর্মীরা, তাঁর পক্ষে আরো অগনিত মানুষ, তাঁর বিপক্ষে অগনিত মানুষ; তাঁকে তৈরি করছিলো তাঁর বড় ভাইয়ের জীবনদান, ফেদোসিয়েভের যন্ত্রনা, প্লেখানভের সাফল্য ও ব্যর্থতা,…..তাঁকে তৈরি করেছিল জার্মানির গণতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রচেষ্টা, প্যারিসের শ্রমিকদের দীপ্তিময় অভ্যুত্থান, পোল্যান্ডের জাতীয় মুক্তিসংগ্রাম, সেন্ট পিটার্সবার্গের শ্রমিক ধর্মঘট। তাঁকে তৈরি করেছিল লন্ডনে অনাহারক্লিষ্ট শীতজর্জরিত কার্ল মার্ক্সের অতন্দ্র অনুসন্ধান, অক্লান্ত পরিশ্রম; তাঁকে তৈরি করেছিল ফেডরিক এঙ্গেলসের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা, বন্ধুপ্রীতি, আদর্শানুরাগ। এইভাবে ধাপের পর ধাপ ধরে একটা মানুষের মধ্যে বহু যুগের বহু মানুষের প্রচেষ্টা রূপ পায়, সে মানুষ একজন ব্যক্তি আর থাকে না, বহু ব্যক্তির দান হয়ে ওঠে সে। বহু হাতের ছোঁয়ায়, বহু মনের আগুনে তৈরি হয়ে ওঠে সে লোকটা । তার মধ্যে এরা সবাই সার্থক হয়ে ওঠে।
ফরাসি সাহিত্যিক রমাঁ রলাঁ বলেছিলেন, গোটা জীবন জুড়ে লেনিন সর্বদাই ছিলেন সংগ্রামী। তাঁর সমস্ত চিন্তাই ছিল এমন, যেন একজন সেনাপতি নজরদারি টাওয়ারে দাঁড়িয়ে যুদ্ধজয়ের লক্ষ্যে পুরো যুদ্ধক্ষেত্রটি পর্যবেক্ষণ করছেন। ‘সর্বহারা বিপ্লব’ নামে পরিচিত মানবসমাজের ঐতিহাসিক ক্রিয়ার সময়কালকে তাঁর মতো মূর্তরূপ দিতে অন্য কেউ পারেনি। কোনও কিছুই তাঁকে বিপ্লবী সংগ্রাম থেকে পথভ্রষ্ট করতে পারতো না। তাঁর ব্যক্তিগত বলে কিছু ছিল না। বিশ্রাম কাকে বলে তিনি জানতেন না। তাঁর চিন্তা ভাসা-ভাসা ছিল না। কোনও দ্বিধা বা বিশ্বাসহীনতা তাঁকে স্পর্শ করতো না।
যে বছর জার্ তার বড় ভাই আলেক্সজান্ডার কে ফাঁসি দেয় সেই বছরই ডিসেম্বরে ছাত্র সভায় সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য লেনিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ও গ্রেপ্তার হন। সেই স্মৃতি স্মরণ করে লেনিন বলছিলেন, যে দারোগাটি তাকে জেলে নিয়ে যাচ্ছিলো সে শিক্ষাদানের ভঙ্গিতে বলছিলো ‘হাঙ্গামা করে কি আর হবে ছোকরা। শেষটা তো এই দেয়াল।’ লেনিন উত্তর দিয়েছিলো ‘দেয়াল তবে ঘুন ধরা, ধাক্কা দিলেই ভেঙে পড়বে।’ সত্যি সত্যি সেই দেয়াল লেনিন ১৯১৭ সালে ভেঙে দিয়েছিলো। এর পরেও বহুবার লেনিনকে জেলে যেতে হয়েছিল। সেখানে বসেই তিনি লেখেন মার্ক্সবাদী পার্টির প্রথম খসড়া কর্মসূচি। কমরেডদের প্রতি ছিল তার গভীর মমত্ববোধ। জেলে বসেই তিনি চিঠিতে নির্দেশ পাঠাতেন – অমুকের জন্য গরম কাপড় সংগ্রহ করো, অমুকের জন্য কনে চাই, অমুক কমরেড নিঃসঙ্গ। যদি তার চোখে পড়তো কোনো কমরেড ভয়ানক অভাবে পড়েছে, অমনি তিনি তার সাহায্যে ছুটতেন।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনে সুবিধাবাদের বিরুদ্ধেও তিনি সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন। লেনিন শেখালেন যে দেখতে যতই গণতান্ত্রিক হোক, সব ধরণের বুর্জোয়া রাষ্ট্রই হল আসলে বুর্জোয়া একনায়কতন্ত্রের একটা প্রকারভেদ। তিনি বললেন রাষ্ট্র শাসনের কাজটা নাকি শুধু ধনীদের অথবা ধনী শ্রেণী থেকে আগত রাজপুরুষদের পক্ষেই সম্ভব এই মিথ্যে রটনাটার সমাপ্তি করতে হবে। আসন্ন সংগ্রামের জন্য তিনি শুধু ভাবাদর্শের দিক থেকে নয় দৈহিক ভাবেও নিজেকে পোক্ত করে তুলেছিলেন এবং সহকর্মীদেরও সেই শিক্ষা দিতেন। লেনিন মনে করতেন বুর্জোয়াদের উপর বিজয়লাভের জন্য দরকার একটা দীর্ঘ, একরোখা, মরীয়া, মরণপণ সংগ্রাম- যে সংগ্রামে চাই সহ্যশক্তি, শৃঙ্খলা, দৃঢ়তা, অটলটা ও ইচ্ছার ঐক্য। লেনিন বলেন, যেইখানেই জনগণ, সেইখানেই কাজ করতে হবে কমিউনিস্টদের। প্রশাসনসর্বস্বতা, হুকুমদারী পদ্ধতি, অধীনস্থদের প্রতি রুঢ়তার তীব্র নিন্দা করতেন লেনিন। তিনি মনে করতেন অন্যান্য মেহনতিদের তুলনায় কোনো বিশেষ সুযোগ ও অধিকার পার্টি সভ্যদের নেই, আছে কেবল আরো বেশি দায়িত্ব।
রাষ্ট্রের চরিত্র বিশ্লেষণ করে লেনিন বলেন, মীমাংসার অতীত যে শ্রেনীবিরোধ, তারি ফলে যদি রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়ে থাকে, রাষ্ট্র যদি উর্ধে অবস্থিত এক শক্তি হয় যে শক্তি সমাজ হতে নিজেকে ক্রমশই বিচ্ছিন্ন করে নিচ্ছে, তাহা হলে স্পষ্টই বুঝা যায় যে, একটা সশস্ত্র বিপ্লব ব্যাতিরেকে নিপীড়িত শ্রেণীর মুক্তিলাভ সম্ভব নয়। একজন মার্ক্সবাদী ও একজন সাধারণ খুদে কিংবা বড়ো বুর্জোয়ার মধ্যে গভীর পার্থক্য বিশ্লেষণ করতে গিয়ে লেনিন বলেন শ্রেণী সংগ্রামের মতবাদের মধ্যে মার্ক্সবাদকে সীমাবদ্ধ করে রাখার অর্থ হচ্ছে মার্ক্সবাদের অঙ্গচ্ছেদ করা, মার্ক্সবাদকে বিকৃত করা, বুর্জোয়াদের গ্রহণযোগ্য একটা কিছুতে মার্ক্সবাদকে পর্যবসিত করা। সেই লোকই মার্ক্সবাদী যে শ্রেণীসংগ্রামের স্বীকৃতি হতে আরো অগ্রসর হয়ে শ্রমিকশ্রেণীর একাধিপত্য পর্যন্ত স্বীকার করে।
নিজেদের ভুল লুকিয়ে রাখতে লেনিন ঘৃণা বোধ করতেন। তিনি বলেন, কী করে ভালো করে সংগ্রাম সংগঠিত করতে হয় সেটা অবিলম্বেই শিখতে শুরু করা দরকার এবং শেখা দরকার অনুষ্ঠিত ভুলগুলো থেকেই। শত্রুর সামনে আমাদের ভুল চেপে রাখা উচিত নয়। তাতে যে ভয় পায় সে বিপ্লবী নয়। বরং আমরা যদি খোলা খুলি শ্রমিকদের বলি: হ্যা আমরা ভুল করেছি; তাহলে তার মানে ভবিষ্যতে এ ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না। সংশোধিত ভুল অদৃশ্য হয়। অসংশোধিত ভুল হয়ে ওঠে পুঁজে ভরা ঘা। লেনিন লেখেন, বলশেভিক প্রতিনিধিদের চমৎকারিত্ব কথার ফুলঝুরিতে নয়, বুর্জোয়া বুদ্ধিজীবীর বৈঠকখানায় হাজিরা দেওয়ায় নয়। বরং শ্রমিক জনগণের সাথে সম্পর্কে, সেই জনগণের মধ্যে আত্মউৎসর্গী কর্মে, করোতালিহীন অতি বিপজ্জনক কাজ চালিয়ে যাওয়ায়।
লেনিনের বক্তৃতার স্মরণ করে মস্কোর একজন কারখানা শ্রমিক পানিউনিন লিখেছিলেন, ‘তার আগুনে কথায় সোজা লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠি আমি। খাওয়া নেই, জামা জুতো নেই, কিন্তু তার প্রতিটি কথা আমরা শুনতাম উদ্দীপ্ত সচেতনতায়।’ ভিয়েতনাম বিপ্লবের নেতা হো চি মিন বলেন, লেনিনবাদ- ভিয়েতনামি বিপ্লবীদের কাছে এ হল কম্পাসের মতো; এ আসলে এক উদ্ভাসিত সূর্য, আমাদের আলোর পথের দিশারী, যা আমাদের পৌঁছে দেবে অন্তিম জয়ের কাছে, যা আমাদের পৌঁছে দেবে সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদে । লেনিনবাদ হল লেনিন কর্তৃক সর্বাঙ্গীন রূপে বিকশিত মার্ক্সবাদ।
১৯১৭ সালের জুন মাস। রাশিয়াতে ইতোমধ্যে জার শাসনের অবসান হয়েছে, বুর্জোয়া বিপ্লব সম্পন্ন। এই সময়ে শ্রমিক ও সৈনিক প্রিতিনিধিদের সোভিয়েতের ১ম সারা রুশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিনিধিদের মধ্যে বলশেভিক, মেনশেভিক, সোসালিষ্ট রেভোলুশনারি পার্টির প্রিতিনিধিরা ছিলেন। মেনশেভিক নেতা সেরেতেলি তার ভাষণে বলেন, এই মুহূর্তে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কে টিকিয়ে রাখার জন্য বুর্জোয়া, পেটি বুর্জোয়া, সমাজতান্ত্রিক সব দলের মধ্যে ঐক্য দরকার নয়তো ভয়ানক বিপদ, আর বুৰ্জোয়ারা ব্যতীত এই মুহূর্তে রাশিয়ায় এমন কোনো পার্টি নেই যারা ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে। এই বক্তব্য শোনামাত্র নিজ আসন থেকেই লেনিন চিৎকার করে ওঠেন ‘এমন একটা পার্টি আছে’। তারপর লেনিন যখন বক্তব্য দিতে উঠলেন তিনি বললেন, বিপ্লবের সাফল্যের জন্য একটা সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট কর্মসূচি দরকার। তিনি তার কর্মসূচি তুলে ধরলেন। তিনি দৃঢ়তার সাথে বললেন দায়িত্ব নেয়ার জন্য বলশেভিক পার্টি প্রস্তুত। লেনিনের যুক্তির বাস্তবতা অধিকাংশ প্রতিনিধি উপলব্ধি করলেও প্রতিনিধিরা অধিকাংশ ছিলেন সোসালিষ্ট রেভোলুশনারি ও মেনশেভিক পার্টির। ভোটে বলশেভিকদের দ্বারা উত্থাপিত প্রস্তাব ‘সোভিয়েতের হাতে সকল ক্ষমতা চাই ‘ গৃহীত হলো না। তার চার কি পাঁচ মাসের পরের ঘটনা দুনিয়ার সব লোক জানে। লেনিনের নেতৃত্বে পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন। সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথম দেশ যেখানে মানুষের সকল মৌলিক চাহিদার দায় নিয়েছে রাষ্ট্র। নারীদের পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমতা নিশ্চিত হয়েছে।
বিপ্লবের পরের বছর রুশ প্রজাতন্ত্রের প্রথম সংবিধান গৃহীত হলে লেনিন বলেন, আমাদের মতো সংবিধান বিশ্বে কখনো দেখা যায় নি। অভ্যন্তরীণ ও সারা বিশ্বের শোষকদের বিরুদ্ধে প্রলেতারীয় জনগণের সংগ্রাম ও সংগঠনের অভিজ্ঞতা লিপিবদ্ধ আছে এতে। ওই বছরই কংগ্রেসের বক্তৃতায় তিনি বলেন, আগে পুঁজিবাদের আমলে টেকনোলজি ও সংস্কৃতির সমস্ত আশীর্বাদ পেতো কেবল ধনীরা, সাধারণ সাক্ষরতাটুটুও ছিল মেহনতিদের আয়ত্তের বহির্ভূত। সোভিয়েত রাজ্ সমস্ত টেকনোলজি, বিজ্ঞান, ও সংস্কৃতিকে করে তুলেছে সর্বজনের আয়ত্তাধীন। লেনিন নিচু তলার লোকদের, সাদামাটা শ্রমিক কৃষকদের পার্টি, রাষ্ট্র, ও ট্রেড ইউনিয়নের কাজে ব্যাপকভাবে টেনে আনার জন্য যথাসাধ্য করেন। তিনি মনে করতেন লক্ষ লক্ষ নারী যখন সামাজিক জীবনে অংশ নেবে, তখন সমাজতন্ত্রের কাজ টা পাকা হবে।
রুশ বিপ্লবের আগের দেড় দশকের (১৯০৩-১৯১৭) অভিজ্ঞতা স্মরণ করতে গিয়ে লেনিন বলছেন, গত পনেরো বছরে বিশ্বের কোন একটা দেশেও বিপ্লবী সংগ্রাম পরীক্ষার দিক থেকে, বৈধ ও অবৈধ, শান্ত ও ঝোড়ো, গোপন ও প্রকাশ্য, চক্রনির্ভর ও গণনির্ভর, পার্লামেন্টারি ও সহিংস আন্দোলনের রূপ বদলের দ্রুততা ও বৈচিত্রের দিক থেকে এতখানি অভিজ্ঞতার ধারে কাছেও যায় নি।
মহান লেনিনের প্রতি আমাদের ভালোবাসার কোনো সীমা নাই। মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য লেনিন তার সমগ্র শক্তি নিয়োগ করেছিলেন।মুক্তিকামী মানুষের প্রতিটা লড়াই এ আজও লেনিনের উপস্থিতি আমরা দেখতে পাই, সেই বিপ্লবী শ্রেণীর মধ্যে, যাদের মুক্তি না আসা পর্যন্ত লেনিনের ঘুম নাই। লেনিন যেন বার বার আমাদের কানের কাছে এসে বলছেন মুনাফার লোভে পরিচালিত এই সমাজটাকে আরো টিকতে দেয়ার অর্থ অসংখ্য মেহনতি মানুষ কে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া, সেটা কর্মস্থলেই হোক আর প্রাণ প্রকৃতি বিনষ্ট করেই হোক। তাই লেনিন তার জন্মদিনে আরো দৃঢ় ভাবে আহ্বান জানাচ্ছে এই ঘুনে ধরা সমাজটাকে ভাঙার জন্য তৎপরতা বাড়াও, পার্টিকে শক্তিশালী করো, তারজন্য মানুষের কাছে যাও।