আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) পালন করছে। এরইমধ্যে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরে ১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার খবর পাওয়া যায়। আন্দোলনকারীরা ধাওয়া দিয়ে পুলিশকে মিরপুর থানার দিকে নিয়ে যায়। আবার পুলিশ ধাওয়া দিয়ে আন্দোলনকারীদের মিরপুর ১০ নম্বরের দিকে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। ব্র্যাক ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় শ্রমিক, সিএনজি অটোচালকসহ ছাত্রদলের কর্মীদের অংশ নিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার পর ঐস্থানে অবস্থান নেয় । পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করে।মেরুল বাড্ডা এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বেলা ১১টার দিকে পুলিশ কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে যায়। বাইরে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নিয়েছেন। সেখানে বেশ কয়েকটি দোকানপাট, স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। বেলা একটার আগে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর থেকে আন্দোলনকারীদের দিকে রাবার বুলেট ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
মাদারীপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি করেছে পুলিশে, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা তাদের উপর উপর্যপুরি হামলা পরিচালনা করে। আন্দোলনকারীরা পাল্টা হামলা চালিয়ে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করে। এই সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ২ জন সংবাদকর্মীসহ সহ ৩০ জন আহত আহত হবার খবর পাওয়া যায়। সংঘর্ষ চলায় মাদারীপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কপথে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ আছে। দুপুরের দিকে মানিকগঞ্জে জেলা শহরের খালপাড়া এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ পাঁচটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
বেলা ১১টার দিকে শনির আখড়া এলাকার দিক থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে যাত্রাবাড়ীর দিকে আসার চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁদের ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়েন। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ছিলেন। একের পর এক কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। শনির আখড়ার কাজলা এলাকা থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত পুরো সড়কে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মিছিল করতে দেখা যায়। বিকেল ৫ টায় ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে বামজোটের কর্মসূচি আছে বলে জানিয়েছেন বামজোটের নেতৃবৃন্দ।