উরুগুয়ের বিপক্ষে কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে ট্রাইব্রেকারে হেরে যায় ব্রাজিল। নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য সমতা থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। বিশ্বকাপের মতো এবারও পেনাল্টি শুটআউটে ব্রাজিল হারল ৪–২ গোলে। দুই বছর আগে কাতার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল। এবার কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালেও টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিতে হলো ব্রাজিলকে।
ব্রাজিলের এই পরাজয়ে সিনিয়র সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, রিয়েল মাদ্রিদের চ্যাম্পিয়নস লীগ জয়ে বড় অবদান ছিলো ভিনিসুয়াস জুনিয়রের। লেফট উইং থেকে তার গতিময় রানিং, ড্রিবলিং ছিলো ভয় জাগানিয়া। উইং থেকে বক্সে পাস কিংবা ড্রিবলিং করে বক্সের ভেতরে ঢুকে গোল-তার খেলা সত্যিই মনোহরক ছিলো গত মৌসুমে। কিন্তু জাতীয় দলে তার সেই খেলা কী অনূদিত হয়? একই কথা রদ্রিগোর ক্ষেত্রেও। ভিনুর পাস ধরে যিনি লা লীগা কিংবা চ্যাম্পিয়নস লীগে গোল করেছেন সেই রদ্রিগোকে কোপায় খুঁজেই পাওয়া যায়নি। কেন?
ফুটবল আসলে টিম গেম। ইউরোপের চার সেরা লীগের, সেরা গোলদাতা তেভেজ, হিগুয়েন, আগুয়েরো, মিলিতোকে নিয়েও ২০১০ এর বিশ্বকাপে কোয়াটার থেকে বিদায় নিতে হয়েছিলো আর্জেন্টিনাকে। অথচ ২০২২ বিশ্বকাপের আর্জেন্টিনাকে দেখেন, মেসি-ডি মারিয়া ছাড়া বড় কোন ক্লাবের প্লেয়ার তাদের ছিলো না। আরো ২/১ জন দেখাতে পারবেন নামী ক্লাবের, তবে ততদিনে তারা বড় থেকে ছোট ক্লাবে চলে গেছে। তাহলে কিভাবে তারা কোপা, ফিনালসিমার পর বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছে? টিম বন্ডিং, প্লেয়ারদের মধ্যে দারুন কেমিস্ট্রি, জাতীয় দলের খেলার সময় ক্লাবের মহাতারকার ভাব সরিয়ে রাখা ছিলো তাদের জয়ের অন্যতম কারন।
ব্রাজিলের তারকাবহুল এই দলের খেলায় সেই টিম বন্ডিং ছিলো না। মিলিটাও ও এনদ্রিক রিয়েলে, মার্কিওনোস পিএসজিতে, রাফিনহা বার্সায়, গিমারেজ নিউক্যাসেলে ও দানিলো জুভেন্টাসে খেলেন। নামি দামি ক্লাবে খেলেন তারা, কিন্তু দল হিসেবে গড়ে উঠছে না ব্রাজিল। এর খেসারত বিশ্বকাপের পর কোপায়ও দিলো সেলেসাওরা।
নির্ধারিত সময়ের খেলায় উরুগুয়ের সাথে গোলশুন্য ড্র করে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে কোপার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় ব্রাজিলের। পাচঁবারের বিশ্বকাপ জয়ীদের টিম বন্ডিং ও খেলার হাল এমন থাকলে হেক্সা জয়ের স্বপ্ন আরো দীর্ঘায়িত যে হবে, তা বলাই যায়।
কোপা থেকে ব্রাজিলের বিদায়ে ফুটবল ভক্তরা হতাশ
© এএফপি