৩রা নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। রাষ্ট্রের হেফাজতে জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় হত্যার দিনটি ‘জেল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সাতচল্লিশ বছর আগে এই দিনে কারাগারে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামারুজ্জামানকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এই দিনটিকে শোক আর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকার এই চার নেতার নেতৃত্বে কুষ্টিয়ার মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আমবাগানে শপথ নিয়েছিল ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বনানীতে জাতীয় চার নেতার তিনজন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তার আগে প্রধানমন্ত্রী সকালে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। আরেক জাতীয় নেতা এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধি রাজশাহীতে।
১৯৭৫ সালে আগস্ট মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর তার ঘনিষ্ঠ এই চার সহকর্মীকে কারাগারে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে ৩ নভেম্বর কলঙ্কময় একটি দিন।
প্রখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থনী মাসকারেনহাস তার ‘বাংলাদেশ এ লিগ্যাসি অব ব্লাড’ গ্রন্থে চার নেতার হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরপরেই জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনাটি এমনভাবে নেয়া হয়েছিল যাতে পাল্টা অভ্যুথান ঘটার সাথে সাথে চার নেতার হত্যাকাণ্ড কার্যকর হয়। আর এ কাজের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি ঘাতক দলও গঠন করা হয়। এই ঘাতক দলের প্রতি নির্দেশ ছিল পাল্টা অভ্যুথান ঘটার সাথে সাথে কোন নির্দেশের অপেক্ষায় না থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে যাতে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ৭৫-এর ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ পাল্টা অভ্যুথান ঘটানোর পরেই কেন্দ্রীয় কারাগারে এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।