প্রিয় শ্রমিক বোনেরা ও ভাইয়েরা,
আপনাদের কাজের গতি ও সময় একটু না বাড়ালে আর হচ্ছে না। আমাদের প্রিয় সরকার গত ১৫ বছরে বেসরকারি বিদুৎকেন্দ্রগুলোকে ভাড়া বাবদ এক লাখ কোটি টাকা দিয়েছে। আপনারা যদি একটু বেশি পরিশ্রম করে সরকারকে টেক্স ভ্যাট না দেন তাহলে এই টাকা কোথা থেকে আসবে বলেন? বিগত ১৫ বছরে ব্যাংকগুলোতে লক্ষ কোটি টাকার উপর খেলাপি ঋণ হয়েছে। জানি, টাকার পরিমান টা আপনাদের মাথায় ঢুকবে না। এখন যদি আপনারা সবাই একটু বেশি পরিশ্রম করে, একটু বেশি উপার্জন করে ব্যাংকগুলোতে অল্প অল্প করে টাকা না জমান, তাহলে ভবিষ্যতে ঋণখেলাপিরা কোথা থেকে টাকা নিবে বলেন? টাকা তো আর মেশিনে ছাপিয়ে নেয়া যায় না, তাইনা? বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সম্মানিত মন্ত্রী, আমলাদের কত কষ্ট করে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতি বছর দেশের বাইরে পাচার করতে হয়! আপনারা যদি একটু কষ্ট করে তাদের মুনাফাটা একটু বেশি করার সুযোগ না করে দেন তাহলে তারা দেশের বাইরে কিভাবে টাকা পাচার করবে? এই বিষয়গুলো আপনাদের কেন বলে বোঝানো লাগবে? যারা দেশের বাইরে থেকে কষ্টকরে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন, তাদেরকে একটু বেশি পরিশ্রম করে আরেকটু বেশি টাকা দেশে না পাঠালে আর চলছে না! দেখেছেন তো ফার্মগেট থেকে এয়ারপোর্টে পর্যন্ত উড়াল সড়ক হয়েছে। যদিও ওই উড়াল সড়কে শুধু প্রাইভেট কারই চলাচল করছে। তাতে কি হয়েছে? তার জন্য যে ঋণ করতে হয়েছে সেটাকি আপনাদের শোধ করতে হবে না? সামনে নির্বাচন আসছে। বড় দলগুলোকে প্রতিনিয়ত বড় বড় সভা সমাবেশ করতে হচ্ছে। তার জন্য টাকা লাগে না? কত কোটি টাকা যে লাগে আপনাদের ধারণাই নাই! ব্যবসায়ীরা যে সে টাকার যোগান দিচ্ছে সে টাকা কি এমনি এমনি আসে? আপনারা কর্মক্ষেত্রে শ্রম দিয়ে যে পণ্য উৎপাদন করেন বা যে সেবা দেন সেই শ্রমের যে মূল্য সেখান থেকে আপনাকে একটু কম দিয়েই ব্যবসায়ীদের মুনাফা হয়। এখন বিষয়গুলো বুঝে আপনারা যদি একটু বেশি পরিশ্রম না করেন তাহলে আমাদের কি করার আছে? আপনারা দেখেছেন তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রতিনিয়ত কত কত উপহার দেন! ব্রিজ, আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাস- এই যে উপহারগুলো উনি আমাদের দেন উনার বেতন কত? ওই বেতনের টাকা দিয়ে কি এতো দামী উপহার হয়? আমাকে কি আপনাদেরকে আবারো বলতে হবে যে কাজের প্রতি আরেকটু বেশি যত্নবান হন কারণ মহান সরকারকে ভ্যাট , ট্যাক্স একটু বাড়িয়ে দিতে হবে? সব বিষয় তো আমি আপনাদেরকে বলে বোঝাতে পারবো না, শোনেন, যদি বেশি বুঝতে না চান তাহলে বলি যে, চলমান ব্যবস্থা কে যদি জান বাজি রেখে ভেঙে শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বে সমাজ গড়তে না শিখেন তাহলে আপনাদের কষ্টের মাত্রা বাড়তেই থাকবে, আমার কিচ্ছু করার নাই!